মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শণের প্রবক্তা ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সমাবেশ করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় মহানগর ও সকল অঙ্গ -সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা । এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক,
আব্দুল কাদির ভূঁইয়া (জুয়েল)
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নির্যাতিত ও কারাবরণকারী নেতৃবৃন্দগণ।নেতৃবৃন্দদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-মোঃমাহবুবুর রশিদ মাহবুব
হুমায়ুন কবির,মোঃশাফায়েত হোসেন রিপন,মাহমুদুল বারী,মির্জা ইয়াসিন আলী, মুশফিক লেলিন,সুলাইমান সোহেল,সাইফুল ইসলাম,আবু জাফর বাদল,জিয়াউর রহমান,বাসার, জহিরুল ইসলাম, হাকিম।
এসময় নেতৃবৃন্দগন
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও পুষ্প স্থাপক অর্পণ ও ফাতিহা পাঠ করেন।
জনাব আব্দুল কাদের ভূঁইয়া (জুয়েল) বলেন।
দেশের সকল ক্রান্তিকাল উত্তরণে শহীদ জিয়া ছিলেন জাতির দিশারী। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর আক্রমণ করার পর তিনি পাকিস্তানী অধিনায়ককে বন্দী করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৬ মার্চ তিনি চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন অসীম বীরত্বে। সেদিন থেকেই দেশবাসী তাঁর অসাধারণ নেতৃতেৃ¦র পরিচয় পায়। স্বাধীনতাত্তোর দূ:সহ স্বৈরাচারী দূঃশাসনে চরম হতাশায় দেশ যখন নিপতিত, জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া যখন বাধাগ্রস্ত হয় ঠিক সেই সংকটের এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান জনগণের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অপরাজনীতি দ্বারা জনগণকে প্রতারিত করে স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন মহল যখন মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়েছিল, দেশকে ঠেলে দিয়েছিলো দূর্ভিক্ষের এক সীমাহীন নৈরাজ্যের মধ্যে, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত হতে হয়, জাতির এরকম এক মহাসংকটকালে ৭ই নভেম্বর সৈনিক জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার হাল ধরেন। একজন সৈনিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও তাঁর জীবনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দেশের সকল সংকটে তিনি ত্রাণকর্তা হিসেবে বারবার অবতীর্ণ হয়েছেন। ক্ষমতায় এসেই তিনি বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পূনঃপ্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শুরু করেছিলেন উৎপাদনের রাজনীতি, দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে তিনি কৃষি বিপ্লব, গণশিক্ষা বিপ্লব ও শিল্প উৎপাদনে বিপ্লব, সেচ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাশ্রম ও সরকারি সহায়তার সমন্বয় ঘটিয়ে ১৪০০ খাল খনন ও পূণর্খনন করেন। গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে অতি অল্প সময়ে ৪০ লক্ষ মানুষকে অক্ষর দান করেন। এছাড়া গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করে গ্রামাঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যবস্থা করেন। তিনি পল্লী চিকিৎসক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, ফলে তাঁর আমলে ২৭৫০০ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগপ্রাপ্ত হয় এবং তাতে গ্রামীণ জনগণের চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধি হয়। জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে শহীদ জিয়া ছিলেন সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক আপোষহীন, নির্ভিক যোদ্ধা। তাই সকল আগ্রাসী শক্তির চাপকে অগ্রাহ্য করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেন। শহীদ জিয়ার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদান হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক জোট ‘সার্ক’ গঠন করা। দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী করে জাতির মর্যাদাকেও বিশ^ব্যাপী প্রশংসিত করেছেন তাঁর শাসনামলে। তাই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেদের নীলনক্শা বাস্তবায়নের কাঁটা ভেবে জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু তাঁর এই আত্মত্যাগে জনগণের মধ্যে গড়ে উঠে দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে এক ইস্পাতকঠিন গণঐক্য।
অসাধারণ দেশপ্রেমিক অসম সাহসিকতা, সততা-নিষ্ঠা ও সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক জিয়াউর রহমানের অবদান দেশের জন্য অসামান্য। শহীদ জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শণেই আমাদের জাতিসত্ত্বার সঠিক স্বরূপটি ফুটে ওঠে-যা আমাদের ভৌগলিক জাতিসত্ত্বার সুনির্দিষ্ট পরিচয় দান করে।
এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতৃবৃন্দগন বলেন
‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখারও অবিণাশী দর্শন। আমি এই মহান রাষ্ট্রনায়কের জন্মবার্ষিকীতে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা; গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার, মানবিক সাম্য, ন্যায়-বিচার ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের হারানো মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানাই।